খুনটা হলো। কিন্তু নাও হতে পারতো। কেন হলো জানি না। খুন করার কোনো ইচ্ছা ছিল না। আবার ছিল যে না, এমন কথাও হলফ করে বলা যাচ্ছে না। আসলে খুনের যে মোটিভ থাকে, তা ছিল না। থাকার কথাও নয়। কিন্তু খুনটা করতে ইচ্ছা করছিল। মানুষের তো অনেক কিছুই করতে ইচ্ছা করে, সে-সব কি সবই করা হয়ে ওঠে? ওঠে না তো? কত কিছু তো চেষ্টা করে, ভেবেও পারা যায় না।আপনি পারেননি, আমিও পারিনি। বাস্তবে যা-যা পারিনি, স্বপ্নে সে-সব পেরে গেছি। যেমন ধরুন, আপনার ওপর আমার ভীষণ রাগ আছে। আপনি আমার চেয়ে বলশালী। কিছুতেই কায়দা করতে পারছি না। স্বপ্নে আপনার পশ্চাদ্দেশে একটা লাথি কষিয়ে দিতে পারি বা সপাটে চড় মেরে দিতে পারি। আবার কোনো দুর্ধর্ষ মহিলা, যার দাপটে বা দুষ্কর্মে ধরণী দ্বিধা হও অবস্থা, দল জুটিয়ে তাকে ধর্ষণ করতে পারি। এভাবে খুনও করতে পারি। এই খুনটাও করতে পারতাম। কিন্তু না, খুনটা সত্যিই হলো। কেন হলো, জানি না। জানার কথাও নয়। কারণ যখন খুন করছি, তখনও জানি না সত্যিই খুনটা করছি কিনা। খুন হয়ে যাওয়ার পর বুঝলাম যে আমিই খুন করেছি এবং খুন করতে পারি। কিন্তু কাকে খুন করলাম? খুন করার আগে কিংবা খুন করার সময়ে তার মুখ দেখা হয়নি। সম্ভবত সেও আমাকে দেখেনি। দেখলে নিশ্চয় বাধা দিত, অন্তত বাধা দেবার চেষ্টা করতো, অথবা পালিয়ে যেত বা চিৎকার করতো। না, সে-সব কিছুই করেনি। আমিও করিনি। খুনের আগে খুনির যে-সব প্রস্তুতি দরকার হয়, তার কিছুই করিনি। এমনকি বোধহয় অস্ত্রও ছিল না আমার কাছে। থাকবেই বা কেন; আমি যে খুন করবো, সেটাই তো জানতাম না! আমাকে কেউ সুপারি দেয়নি, কেউ প্ররোচিত করেনি, যাকে খুন করলাম, তাকে আগে দেখেছি কিনা তাও তো জানতাম না। তিনি পুরুষ না মহিলা, তাও তো জানতাম না। অথচ খুনটা করে ফেললাম। নিখুঁতভাবেই করলাম।
Comments
Post a Comment