সেদিন দুপুরেই খাওয়াদাওয়া সেরে জিপ ভাড়া করে আমরা রাঁচির উদ্দেশে রওনা দিলাম। রাঁচি পৌঁছে আবার বাস বা জিপে করে মুড়ি স্টেশনে যাবো। ওখান থেকে পুরুলিয়া যাওয়ার ট্রেন পেয়ে যাবো। একটা জিপ-ই পেয়ে গেলাম আমরা। জিপে করে সন্ধ্যা-উত্তীর্ণ সময়ে যখন মুড়ি রেলস্টেশনে পৌঁছেছি, পুরুলিয়াগামী ট্রেন ততক্ষণে ছেড়ে চলে গেছে। রাঁচি থেকে মুড়ি যাওয়ার পিচের রাস্তাটির দু'পাশে ঘন জঙ্গল, খুব দূরে-দূরে ছোটো-ছোটো জনপদ, দু-একটি দোকান, সন্ধে নেমে আসতেই জোনাকির আলো বনে-বনে খুবই মনোরম দৃশ্যের অবতারণা করছিল। মুগ্ধ হয়ে এই অরণ্যভূমির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। মুড়ি স্টেশনে পৌঁছে যখন দেখলাম শেষ ট্রেন চলে গেছে, তখন একটু হতাশ-ই-ই হলাম আমরা। আবার আগামীকাল সকাল আটটা নাগাদ পুরুলিয়াগামী ট্রেন। এখন কী করা যায়? ভাবতে-ভাবতে একটা ছোটো হোটেলের সামনে এসে দাঁড়ালাম। হোটেলের মালিক এক প্রৌঢ় বাঙালি ভদ্রলোক। এদিকে আমাদের টাকাপয়সা তো শেষ; সবার পকেট কুড়িয়ে সামান্য কিছু টাকা একজায়গায় জড়ো করা হলো। ভদ্রলোককে সবকিছু খুলে বললাম। উনি ধৈর্য ধরে শুনলেন। আমরা যে আতান্তরে পড়েছি, তা উনি বিলক্ষণ বুঝলেন। বললেন, "একটা তো রাত, থাকুন আপনারা হোটেলে। দুটো রুম হলেই তো হয়ে যাবে। রাতে খাওয়াদাওয়া করুন। হোটেলের রুম ভাড়া দিতে হবে না; খাওয়ার খরচটা দেবেন। না-থাকলে, পরে মানি-অর্ডার করে পাঠিয়ে দেবেন। ভদ্রলোকের ছেলে আপনারা, এটুকু তো মানুষ হিসাবে করতেই হবে আমাকে!" একথা বলে একটা ছেলেকে বললেন, "এই বাবুদের জন্য একতলায় ভালো দেখে দুটো বড়ো ঘর খুলে দিয়ে খাওয়ার জলটল দিয়ে দে।" রান্নার ঠাকুরকে বললেন, "বাবুদের জন্য ভাত, ডাল, ভাজা আর ডিমের ঝোল রান্না করো।" আর আমাদের বললেন, "আপনারা এখন চা-বিস্কুট খান। রান্না হলে, খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুমিয়ে পড়ুন। কাল সকাল-সকাল উঠে তৈরি হয়ে নেবেন। কাছেই স্টেশন। আপনাদের ট্রেন কিন্তু সকাল ঠিক আটটায়।" আমরা তো তাঁর কথা শুনে স্বস্তির শ্বাস ফেললাম। রুমে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে বারান্দায় এসে চা খেলাম। রাত ন'টা নাগাদ ঠাকুর খেতে দিল। চমৎকার রান্না। খিদেও পেয়েছিল। সেই সকাল এগারোটায় নেতারহাট ডাকবাংলোয় সেলিমের হাতে খেয়ে এসেছি ভাত, ডাল, ভাজি। খাওয়াদাওয়া সেরে, দশটা নাগাদ সবাই ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে আমরা বারান্দায় বসে চা খেলাম। ভদ্রলোককে রাতের খাবারের টাকা দিলাম; চায়ের দাম কিছুতেই নিলেন না। অজস্র ধন্যবাদ জানিয়ে ওঁর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে, স্টেশনে এসে যথাসময়ে পুরুলিয়াগামী ট্রেনে উঠে ঝালদা স্টেশনে নামলাম। ঝালদা থেকে বাসে করে পুরুলিয়ায় আমাদের ডেরায় পৌঁছলাম সকাল এগারোটার মধ্যেই।
সেদিন বিকালে বেরিয়ে পুরুলিয়া শহরটি ভালো করে ঘুরে দেখলাম। পরেরদিন সকালে হাওড়াগামী ট্রেনে উঠে, শিয়ালদহ হয়ে বাদকুল্লায় বাড়ি ফিরে এলাম। পরেরদিন ভাইফোঁটা। তার পরেরদিন স্কুল, আমার নতুন কাজের জায়গা। ওইদিন শিয়ালদহে ট্রেনে ওঠার আগে শান্ত আমাকে স্টেশনের কাছে একটা হোটেলে খাওয়ালো। কত বড়ো একটা চিতলের পেটি খেলাম! এখনও সেই স্বাদ মুখে লেগে আছে। শিয়ালদহে সেই সময়ে সস্তায় খুব ভালো খাবার পাওয়া যেত হোটেলগুলিতে। ওই হোটেলে চিতলের পেটি খেতে-খেতে মনে পড়লো, ১৯৭১-এর গোড়ায় কলেজ স্ট্রিটে বই কিনতে গিয়ে শিয়ালদহ স্টেশন চত্ত্বরেই ব্যারন্স-এ আমি আর ভাস্কর সর্ষে-ইলিশ দিয়ে ভাত খেয়েছিলাম। আহা, সেই ইলিশের কী স্বাদ!
এবার আমার স্কুলে পড়ানোর দিনগুলোর কথা বলবো। তার আগে আমার জীবনের দুটি ঘটনার কথা বলি। আগে বলতে ভুলে গিয়েছি। মা-র মৃত্যুর পরে শ্রাদ্ধশান্তি মিটে যাওয়ার এক সপ্তাহ পরের ঘটনা। দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পরে হাওয়াই চটি, সাদা পায়জামা, সাদা চাইনিজ শার্ট পরে বাজারে নিতাই মোদকের মিষ্টির দোকানে যথারীতি খবরের কাগজ পড়তে গিয়েছি। মুণ্ডিত মস্তক তখনও। বেলা আড়াইটে মতো হবে। কাঠের বেঞ্চে বসে কাগজ পড়ছি। একজন দীর্ঘকায় ও কৃষ্ণকায় সন্ন্যাসী কৌপিন পরে, হাতে কমণ্ডলু ও ত্রিশূল নিয়ে 'ব্যোম শংকর' বলে শঙ্খ বাজিয়ে নিতাইদা-র দোকানে ঢুকলেন। নিতাইদা আমার সামনের হাইবেঞ্চটি জল দিয়ে মুছে পদ্মপাতায় দুটি রাজভোগ রেখে, সন্ন্যাসীকে নতমস্তকে আবাহন করে মিষ্টান্ন গ্রহণ করতে বললেন। সন্ন্যাসী মিষ্টি খেয়ে, মুখ ধুয়ে, কমণ্ডলু থেকে জল পান করে সেই বেঞ্চে বসে দেখি আমার কপালের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছেন! কিছুক্ষণ পরে আমাকে তাঁর কাছে ডাকলেন। কপালের দিকে তাকিয়ে, সম্প্রতি আমার মা-র মৃত্যুর কথা বললেন এবং আমার জীবনের অতীতের কথা সব গড়গড় করে বলে চললেন। আমি বিস্মিত, কীভাবে তাঁর এসব জানার কথা! এবার যা বললেন, তাতে আমি চমকে গেলাম। বললেন, একবছরেরও কম সময়ের মধ্যে আমি চাকরি পাবো এবং আমার জীবনে নানা বাধাবিঘ্ন আসবে; এমনকি মৃত্যুযোগও আছে। এসবের প্রতিবিধানকল্পে তিনি আমাকে একটি তাবিজ দেবেন। বললেন, "তোমার অভিভাবকের অনুমতিসাপেক্ষে আগামীকাল (মঙ্গলবার) এখানে এইসময়ে খাঁটি রুপোর একটি খালি তাবিজ নিয়ে আসবে।" আমি বাড়ি ফিরে দিদি-দাদাবাবুকে একথা বলায় তাঁরা তো এককথায় রাজি হলেন। বাড়ির কাছেই জানকী স্যাঁকরার দোকানে গিয়ে বললাম সব। জানকীদা আমাকে বসিয়ে আধঘন্টার মধ্যেই তাবিজটি তৈরি করে দিলেন। আমি দাম দিয়ে বাড়ি ফিরলাম। পরেরদিন যথাসময়ে সন্ন্যাসীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম। উনি তাবিজটি নিয়ে কী-সব ভরে দিলেন এবং নিতাইদা-র কাছ থেকে মোম ও দেশলাই নিয়ে তাবিজের মুখ বন্ধ করে আমার হাতে দিয়ে বললেন, "আজ মঙ্গলবার, সন্ধ্যায় স্নান করে সিক্তবস্ত্রে বাড়ির তুলসীমঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে তোমার মা-বাবার ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করে কালো সুতো দিয়ে এই তাবিজটি ডানহাতে ধারণ করবে। এই তাবিজ পরে আঁতুড়বাড়ি, শ্মশানমশান সর্বত্র যেতে পারবে; কোনো নিষেধ নেই। হাত থেকে খুলে পড়ে গেলেও সে আবার তোমার কাছেই ফিরে আসবে।" আমি সশ্রদ্ধচিত্তে দূর থেকে তাঁকে প্রণাম করে (সন্ন্যাসীদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে আমার মা আমাকে বারণ করে গিয়েছিলেন) তাবিজটি নিলাম। পকেট থেকে দাদাবাবুর দেওয়া পাঁচসিকে পয়সা দক্ষিণা হিসাবে তাঁকে দিলাম। তিনি হাত দিয়ে তা গ্রহণ করে আবার আমার শার্টের পকেটে ঢুকিয়ে দিয়ে বললেন, "হ্যাঁ, আমি দক্ষিণা গ্রহণ করেছি।" তারপর তিনি আমার মস্তক চুম্বন করে বললেন, "ওঁ নমঃ শিবায়"। আমি বিনম্রকন্ঠে বললাম, "আপনার সাথে আমার আবার কখনও দেখা হবে কি?" প্রত্যুত্তরে হেসে তিনি বললেন, "না, সে-সম্ভাবনা ক্ষীণ।" আমি সেদিন সন্ধ্যাবেলায় তাঁর নির্দেশমতো তাবিজটি ধারণ করলাম। সেটি আমার শরীরে এখনও রয়েছে। কতবার ছিটকে কোথায় গিয়ে পড়েছে! আবারও তাকে ফিরে পেয়েছি। যখন ভারতবর্ষের নানা প্রান্তে, নানা ধর্মস্থানে ভ্রমণ করেছি, তাঁকে খুঁজেছি। মনেপ্রাণেই চেয়েছি, যদি হঠাৎ কোথাও দেখা হয়ে যায়। বিশেষ করে দক্ষিণাবর্তে— অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্নাটক ও কেরালা ভ্রমণের সময়ে। কিন্তু না, তাঁর সঙ্গে আর দেখা হয়নি। দক্ষিণাবর্তের কথা বিশেষত উল্লেখ করলাম, কারণ আমি বুঝতে পেরেছিলাম উনি দক্ষিণ ভারতের মানুষ। ওঁর হিন্দি উচ্চারণে দক্ষিণী টান ছিল।
আরও একটা অত্যাশ্চর্য ঘটনা ঘটেছিল আমার জীবনে। তখন কৃষ্ণনগর পৌরসভায় চাকরি করি। বাদকুল্লা স্টেশনঘরের ভিতরে গিয়েছি মান্থলি টিকিট কাটতে। দেখি, স্টেশনমাস্টারের সামনের চেয়ারে বসে আছেন দুলাল মজুমদার মহাশয়। ডিস্ট্রিক্ট শিডিউলড কাস্ট অ্যান্ড ট্রাইব ওয়েলফেয়ার অফিসার, নদীয়া। আমাদের পাড়ার মানুষ। উনি অ্যাস্ট্রোলজির চর্চা করতেন। হঠাৎ বললেন, "প্রাণেশ, আগামীকাল রবিবার। সকাল দশটা নাগাদ আমার বাড়ি এসো; দরকার আছে তোমার সঙ্গে।" আমি ওঁকে বিশেষ শ্রদ্ধা করতাম ওঁর সম্ভ্রম জাগানো ব্যক্তিত্বের কারণে। বললাম, "হ্যাঁ দাদা, যাবো।" তো, গেলাম পরেরদিন। টেবিলে একটা ফুলস্কেপ কাগজ নিয়ে আমার নাম লিখলেন। বললেন, "জন্মবার জন্মতারিখ বলো।" কী সব ছক কেটে বললেন, "না, ভুল হচ্ছে; ঠিক করে বলো তো আবার।" আমি বললাম, "দাদা, স্কুল রেকর্ডে আমার জন্মতারিখ আছে ১৮.০৬.১৯৫৩। কিন্তু সে তো আমি প্রথম জানলাম হায়ার সেকেন্ডারির অ্যাডমিট কার্ডে এবং প্রথম থেকেই তারিখটি সম্পর্কে আমার খটকা ছিল। আসলে দিদি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করানোর সময়ে বাংলা সন-তারিখ বলেছিল। সেটা স্কুল যখন ইংরেজিতে কনভার্ট করেছে, ভুলটা সেখানেই হয়েছে। আমার তো কিছু করার নেই!" তখন তিনি বললেন, "তোমার মা তোমাকে জন্মবার, তারিখ ইত্যাদি কী-কী বলেছিলেন মনে করে বলো।" আমি বললাম, "পৌষ সংক্রান্তির গভীর রাতে, রাত বারোটার এদিক-ওদিক আমার জন্ম হয়েছিল। সেটা ছিল রবিবার। নীলু হাড়ির মা আমার দাইমা। তিনি বাঁশের চোঁচ দিয়ে আমার নাড়ি কেটেছিলেন।" দুলালদা এসব শুনে আবার ছক কেটে কী সব আঁক কষতে লাগলেন। দু-তিন মিনিট পরে বললেন, "হ্যাঁ, এবার মিলে যাচ্ছে। আসলে তোমার জন্ম ১৬.১২.১৯৫১, রবিবার রাত বারোটার পর। কন্যা লগ্ন, কর্কট রাশি।" তিনি ঠিকুজির ড্রাফ্ট করলেন সঙ্গে-সঙ্গে। এবার তো ভয়ঙ্কর কথা বললেন, "শোনো, মঙ্গল খুব খারাপ তোমার। সামনেই বড়ো বিপদ আছে—মৃত্যুযোগ আছে। আমি এর প্রতিকার করে দিচ্ছি। তবে সাবধানে থাকবে।" উনি একটা শিকড়ের কথা বললেন। কৃষ্ণনগরের এক তান্ত্রিকের কাছে ওই শিকড়টা (অনন্তমূল) নিয়ে আমায় যেতে বললেন। একটা চিঠিও লিখে দিলেন তাঁকে। আমি পরেরদিন স্নান করে গেলাম। তিনি মা কালীর পুজোয় বসেছিলেন। চিঠিটা নিয়ে সঙ্গে-সঙ্গে শিকড়টি মায়ের পায়ে ছুঁইয়ে মন্ত্রপূত করে বললেন, "নাও, কাল মঙ্গলবার সকালে স্নান করে লাল সুতোয় বেঁধে ডানহাতে পরবে। আঁতুড়বাড়ি, শ্মশান ও হাসপাতালে এটা পরে যাবে না। যেতে যদি হয়-ই, বাড়িতে খুলে রেখে যাবে। ফিরে এসে, স্নান করে পরবে।" আমি সেই তান্ত্রিক মহোদয়কে সশ্রদ্ধ প্রণাম করে তাঁর কাছেই মেঝেতে পাঁচসিকে পয়সা প্রণামী রেখে বিদায় নিলাম। তিনি বললেন, "ইয়ংম্যান, ভয়ের কিছু নেই। দুলাল তোমায় বাঁচিয়ে দিয়েছে, আর মা তারা তো আছেন-ই।" আমি পরেরদিন মঙ্গলবার শিকড়টি হস্তে ধারণ করলাম বিধি অনুসারে।
এই ঘটনার মাসখানেক পরে অফিস ছুটির পর শেয়ারের রিকশায় উঠেছি হাসপাতাল মোড় থেকে। কৃষ্ণনগর স্টেশনে আসবো। বাড়ি ফেরার ইএমইউ কোচের লোকাল ট্রেন সন্ধে সাড়ে-ছ'টায়। রিকশা দু'মিনিট এগিয়েছে। আমি রিকশার ডানদিকে। হঠাৎ পিছন থেকে এক মোটরবাইক রিকশাটাকে ধাক্কা দিল। আমি ছিটকে বড়ো রাস্তায় পড়েছি। মাথা অ্যাসফল্টে পড়ে ফেটে গেছে। রক্ত ঝরছে। দেখি, দশচাকার লোডেড এক লরির চাকা আমার মাথার দিকে এগিয়ে আসছে। ভয়ে চোখ বন্ধ করেছি। মাথার সামান্য দূরে লরিটি ব্রেক কষে থেমে গেল। দেখলাম, লরির শিখ ড্রাইভার আমাকে পাঁজাকোলা করে লরির কেবিনে ওর পাশে বসিয়ে সোজা জেলা হাসপাতালের মধ্যে গাড়ি ঢুকিয়ে ইমারজেন্সিতে নিয়ে এলেন। কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স সঙ্গে-সঙ্গে আমাকে ইনজেকশন দিলেন; ক্ষত ওয়াশ করে পাঁচ-ছ'টা সেলাই করে দিলেন। আমি ততক্ষণে পুরো ধাতস্থ হয়ে গেছি। শিখ ড্রাইভারটি বাইরে আমাকে একটা চায়ের দোকানে নিয়ে এলেন। সেখানে বড়ো সসপ্যানে টগবগ করে দুধ ফুটছিল। তিনি দোকানিকে বললেন, "অনেক রক্ত ঝরেছে। ওকে গরম দুধ দিন এক লিটার মতো। পরিষ্কার কাচের গ্লাসে দু'বার দুধ দিলেন দোকানি। আমিও আস্তে-আস্তে খেয়ে নিলাম পুরোটা। এবার দেবদূতের মতো সেই শিখ ড্রাইভার লরি করে আমাকে স্টেশনে পৌঁছে দিলেন। স্টেশনে আমার গ্রামের এক বন্ধু। সেও ট্রেন ধরবে। ট্রেন আবার ৭:২৫-এ। আমাকে আমার বন্ধুর জিম্মায় রেখে তিনি লরির কাছে চললেন। এনএইচ ৩৪ ধরে কলকাতায় যেতে হবে তাঁকে। ট্রেন ধরে আমিও বাড়ি। পুরো এক সপ্তাহ বিশ্রাম। মৃত্যুযোগ কেটে গেল আমার।
(ক্রমশ)
Comments
Post a Comment