রঞ্জনা বসু

নিয়ত যাপনে

১.
ভালোবাসার আলোটুকু তোমাকে দিলাম
যা-কিছু অন্ধকার দূষিত আবহ সব
আমার অসুখ হয়ে থাক। 

২.
সবুজ ফ্রক আর সাদা জামা
চওড়া ফিতায় চুলের ঝুঁটি
বেঁধে দিত মা, নাম তার স্কুলবেলা
স্মৃতির অথই জলে
আজও যেন সাঁতার কাটে
ভুল করেও তাকে ভোলা গেল না। 

৩.
কী অদ্ভুত এই দিনগুলো
একটুকরো বসন্ত আসে
মন হু-হু করা বিষাদ আছে
অপেক্ষার নির্জনে বসে মনে হয়
কী যেন থাকার কথা ছিল
অথচ তা নেই! 

৪.
অন্ধকারে আলো চাইতে গিয়ে
যে ভোরকে ভালোবেসেছে
সে আজ সবাইকে ডেকে এনে
বলেছে, দ্যাখো...আমাদের ঘরে
কেমন রোদ্দুর ছড়িয়ে পড়েছে! 

৫.
কেউ-কেউ ঘরে ফেরে
কারও-কারও ঘর নেই
ঘর খুঁজে মরে...শুধু একটি
ঘরের জন্য, আকাশ দ্যাখেনি
যে আর কোনোদিনও। 

৬.
একাকী হৃদয় ছুঁয়ে বসন্ত দুপুর
নিঝুম দিনের মায়া তুচ্ছ নয় জেনে
এখনও স্বপ্নে আছে সহজ মানুষ। 

৭.
আমার বিষণ্ণ বেলা
তোমার রঙিন অবকাশ
আমাদের নিয়ত যাপন থেকে
ফিরে গেছে বসন্তের চাঁদ। 

যেখানে প্রেম নেই, সেখানে অভিমান বড়ো বেমানান।

৮.
মায়ের আটপৌরে আঁচলে বাঁধা চাবির গোছা
টুংটাং সুর তুলে ঘুরে বেড়ায় সমস্ত উঠান
ভরসা আর বিশ্বাসের সেই দুটি চোখে
আমরা তাকিয়ে থাকি সারা দিনমান 
ঝুপ করে অন্ধকার নেমে এলে
বড়ো অসহায় লাগে। 

৯.
যারা ভালোবেসে খুঁজেছিল সেই প্রেমযুগ
আদর-নোলকে রেখেছিল অনন্ত সময়
এই জন্মে, পরজন্মে সমস্ত রঙ ছড়িয়ে দিতে
সবাই বনফুল, বসন্তদিনে ওরা সব কবিতাময়। 

১০.
এমন কিছু বলে যাও
যেন তোমাকেই মনে পড়ে
এমন করে তাকাও
আমার চোখ যেন না-সরে
আর যদি হারিয়ে যেতে চাও, যেও
সেদিন কেউ না-থাকি যেন
বিরহের অনাদরে। 

Comments