জীবনবোধ যত বেশি আলোড়ন করছে, ততই যেন জীবনে একা হয়ে যাচ্ছি। এ যেন ভাঙা কাঠামোর উপর বারেবারে মাটি লেপে যাওয়া। পঞ্চাশ পেরোনো লেন্সে জীবনের সব জোড়াতালি ধরা পড়ে যায়। ক্লান্ত শরীর আরামকেদারায় কাটায় বিনিদ্র রজনী। একাদশীর চাঁদের আলো ধুইয়ে দেয় ভিজে চোখের পাতা। ইতিহাস নীরব সাক্ষী আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতায় কতটা ছলনা ছিল ।আমাদের স্বর্গরাজ্যে আমরাই কাঁটাতার বসিয়ে ঘৃণার কামান দেগেছি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পড়ছে বিকৃত ইতিহাস। সত্যের টুঁটি চেপে ধরলে কি মুক্তির ফুল ফোটে? ক্লান্ত বুকের হৃদস্পন্দন ইট-কাঠ-পাথরের নিচে চাপা পড়ে যায়। শিকারায় বসে কিছু নামহীন সম্পর্ক সুগন্ধি তেল মেখে আখরোট-কাঠের গহনার বাক্স খোলে। পাইনবনের দীর্ঘশ্বাস গায়ে মেখে রক্তাক্ত উপত্যকার ঘোড়ার দল থমকে দাঁড়িয়ে যায়। বারুদের গন্ধ ঢেকে দেয় চিনারপাতার সবুজ মিষ্টি গন্ধ। ডাল লেকের উপর সারিসারি হাউসবোট প্রশ্নচিহ্ন আঁকে। জলপাই রঙের শাসন আপেল, ম্যাপেল আর উইলো গাছের ঘুম উড়িয়ে দেয়। যন্ত্রণাবিদ্ধ পিরপাঞ্জালের ক্রিভাস থেকে উঠতে থাকে হতাশার কালো ধোঁয়া। অচেনা উপত্যকাকে দেখে লিডার নদী থমকে দাঁড়ায়। মনের গোপন ঘরে ওঠে শোকসাগরের উত্তাল ঢেউ। কবিতার খাতায় জমতে থাকে গুঁড়োগুঁড়ো বরফ। দিনের শেষে সবাই ঘরে ফিরতে পারে না। অশ্রুনদীর একপাশে চাপচাপ রক্ত আর অন্যপাশে ঈশ্বর বসে অংক মেলাতে পারেন না। নির্ঘুম চোখের অন্ধকার লুকিয়ে ফেলি চশমার আড়ালে। অমানবিকতাকে বিদ্ধ করার সুদর্শনচক্রটা কোথায়? অভিমানের কুয়াশা জড়িয়ে মেঘ-পাহাড়ের দেশে ঘুমিয়ে পড়ে সভ্যতা। সাধারণ মানুষের হাহাকারে মুখরিত হয় আমার নির্ঘুম শিবির।
Comments
Post a Comment